Tuesday, 5 May 2015

রাতে ল্যাপটপ ব্যবহার অনিদ্রার ঝুঁকি বাড়ায়

মার্কিন গবেষকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন, ঘুমানোর আগে ল্যাপটপের ব্যবহার ইনসমনিয়া বা অনিদ্রার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই গবেষকরা জানিয়েছেন, ঘুমাতে যাবার কমপক্ষে দুইঘন্টা আগেই ল্যাপটপ বন্ধ করা উচিৎ। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইনের।


গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে যে উজ্জ্বল আলো বের হয়, তা মানুষের মস্তিষ্ক এবং ঘুমের নিয়মে বিভ্রান্তি তৈরি করে। কেবল ল্যাপটপ নয়, বেশ কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইসও মনে বিভ্রান্তি তৈরি করে। এমনকি দিনের বেলাতেও এ বিভ্রান্তি দূর হয় না। ফলে ঘুমহীন সময় কাটানোই একসময় ইনসমেনিয়ার রূপ নেয়।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শরীরে প্রাকৃতিক ঘড়ির জানালা রাত ৯ থেকে ১০ টার মধ্যে বন্ধ হতে শুরু করে। কিন্তু এসময় কম্পিউটার ব্যবহার মনকে বিভ্রান্ত করে তোলে। একজন মানুষের মস্তিষ্ক প্রাকৃতিকভাবে সূর্য ওঠার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলে। সূর্যের উজ্জ্বল কিরণে মস্তিষ্ক জেগে ওঠে এবং মেলাটিন নামের হরমোন নিঃসরণ বন্ধ করে দেয়। জানা গেছে, মেলাটিন হরমোন রাতের বেলা ঘুম আনার জন্য কাজ করে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, আইপ্যাডের মতো ডিভাইস থেকে বের হওয়া নীল রঙের আলো মস্তিষ্কের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মস্তিষ্ক যখন ঘুমানোর জন্য অন্ধকার চায়, তখন স্ক্রিনের এ নীল আলো বিভ্রান্ত করে দিতে পারে মস্তিষ্ককে। মানুষের চোখ নীল আলোতে অনেক বেশি সংবেদনশীল থাকে। বলা হচ্ছে, দিনের বেলা এ আলো সহনীয় হলেও রাতের জন্য নয়।

এ গবেষণার উল্লেখ করে ল্যাপটপে বই না পড়ে সরাসরি বই পড়ার পরামর্শই দিয়েছেন গবেষকরা। তারা জানিয়েছেন, ভালো বই মস্তিষ্কের বিশ্রামেও সহায়ক। এমনকি তা ভালো ঘুমও এনে দিতে পারে, কারণ বাতির আলো সরাসরি চোখে না পড়ায় মস্তিষ্কের কোনো ক্ষতি হয় না।

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার িস্লপ ডিজঅর্ডার সেন্টারের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর অ্যালন আভিডান জানিয়েছেন, ‘বাতি জ্বালিয়ে পুরোনো দিনের কোনো বই পড়ার অভ্যাস করাই ভালো হবে। তবে এ বাতিটি যেনো বেশি উজ্জ্বল না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন’।

সংবাদমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, শোবার ঘরে টেলিভিশন চললেও ঘুমের খুব বেশি ব্যাঘাত ঘটে না, যতোটুকু ল্যাপটপ ব্যবহারে ফলে ঘটে। কারণ টেলিভিশনে বিম লাইট ব্যবহার করা হয় না; আর আমরা টেলিভিশন খুবই কাছে থেকেও দেখি না, যতোখানি কাছে থাকে ল্যাপটপ।

No comments: